চুলের যত্নে মেহেদি পাতার উপকারিতা ও ব্যবহার

চুলের যত্নে মেহেদি পাতার উপকারিতা ও ব্যবহার সর্বাধিক লক্ষ্য করা যায়। চুলের যত্নে আমরা বিভিন্ন জিনিস ব্যবহার করে থাকি তার মধ্যে মেহেদি পাতা অন্যতম। আজকের ব্লগে আমরা জানবো : চুলের যত্নে মেহেদি পাতার  উপকারিতা , মেহেদি পাতার সঠিক ব্যবহার, চুলের যত্নে সরিষার তেল ও মেহেদি , মেহেদী পাতার হেয়ার প্যাক ,ভুলভাবে মেহেদি ব্যবহারের কারণে চুলের ক্ষতি ।

আপনারা হয়তো জানেন যে চুলের যত্নে মেহেদি পাতার উপকারিতা সবচেয়ে বেশি তাই এর ব্যবহারও বেশি প্রত্যক্ষ করা যায়। তবে বেশ কিছু নিয়ম মেনে মেহেদী পাতা ব্যবহার করা উচিত।

বাড়িতে মেহেদি পাতা বেটে চুলে ব্যবহার করলে সুন্দর রং দেওয়ার পাশাপাশি চুলের গোড়া মজবুত রাখে এবং চুল হয় ঝলমলে।

চুলের যত্নে মেহেদি পাতার উপকারিতা 

চুলের যত্নে মেহেদি পাতার উপকারিতা

আপনারা হয়তো জানেন যে চুলের যত্নে মেহেদি পাতার উপকারিতা সবচেয়ে বেশি তাই এর ব্যবহারও বেশি প্রত্যক্ষ করা যায়। তবে বেশ কিছু নিয়ম মেনে মেহেদী পাতা ব্যবহার করা উচিত।

বাড়িতে মেহেদি পাতা বেটে চুলে ব্যবহার করলে সুন্দর রং দেওয়ার পাশাপাশি চুলের গোড়া মজবুত রাখে এবং চুল হয় ঝলমলে।

মেহেদী পাতায় বিদ্যমান প্রোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মাথার ত্বকের জ্বালাপোড়া দূর করার পাশাপাশি মাথা ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।

এছাড়া মেহেদি পাতা ফাঙ্গাস বিরোধী হওয়ায়  সব ধরনের সংক্রমণের হাত থেকে চুলকে রক্ষা করে। এছাড়াও চুলের যত্নে মেহেদি পাতার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। চলুন দেরি না করে দেখে নেওয়া যাক 

চুলের যত্নে মেহেদি পাতার উপকারিতা সবচেয়ে বেশি। মেহেদি পাতার যে সকল উপকারিতা প্রত্যক্ষ করা যায় তা নিম্নে বর্ণিত হলো।

 

চুলকে ঘন ও মজবুত করা

মেহেদির অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণ চুলের ফলিকলকে শক্তিশালী করে এবং চুলের ঘনত্ব বাড়ায়।

খুশকি প্রতিরোধ

মেহেদির শীতল প্রভাব মাথার ত্বকে খুশকি হওয়া প্রতিরোধ করে।

 

মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখে

মেহেদি পাতা মাথার ত্বক ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। যার ফলে চুলের বৃদ্ধি সম্ভব হয় এবং স্ক্যাল্প সুস্থ থাকে।

খুশকি দূর করে

মেহেদি পাতা খুশকি দূর করে। মেহেদি পাতার সাথে লেবুর রস এবং টক দই মিশ্রিত করে চুলে লাগালে খুশকি দূর হয়।

চুল পড়া কমায়

চুল পড়া কমাতে মেহেদি পাতা অনেক বেশি কার্যকরী। মেহেদি পাতার সাথে মেথি গুঁড়া, আমলকি গুড়া, ডিমের সাদা অংশ এবং লেবুর রস মিশিয়ে চুলে লাগান। এটি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করলে চুল পড়া কমবে খুব সহজে।

চুল রঙিন করতে

চুল প্রাকৃতিক উপায়ে রঙিন করতে মেহেদী পাতার জুড়ি মেলা ভার। চা পাতা ফুটিয়ে সেটি ঠান্ডা করে মেহেদি পাতার সাথে মিশিয়ে চুলে লাগালে এটি প্রাকৃতিক উপায়ে চুল রঙিন করতে সহায়তা করে। পাশাপাশি চুল হয় ঝলমলে।

চুল লম্বা করতে

মেহেদি পাতা বেটে তা চুলে লাগালে চুল লম্বা হয় খুব দ্রুত। এক্ষেত্রে শ্যাম্পু অথবা সিরাম ব্যবহার করার পর মেহেদি পাতা ব্যবহার করতে হবে। এটি অন্তত সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করতে হবে।

ডিপ কন্ডিশনিং হিসেবে

মেহেদি পাতা ডিপ কন্ডিশনিং হিসেবে কাজ করে। আপনার চুল যদি রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে থাকে তাহলে মেহেদী পাতা আপনার জন্যই প্রয়োজনীয়।

পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখে

চুলে মেহেদি পাতার ব্যবহার করলে সিবাম গ্রন্থি থেকে তেল নিঃসরণ কমে যায়। এবং পিএইচ এর ভারসাম্য বজায় থাকে।

চুলের রুক্ষতা দূর করে

মেহেদী পাতা পেস্টের সাথে ডিমের সাদা অংশ এবং টক দই মিশিয়ে ব্যবহার করলে চুলের রুক্ষতা দূর হয় এবং চুল মসৃণ এবং কোমল হয়।

 

  • সাধারণত চুলে এক ঘন্টা থেকে তিন ঘন্টা পর্যন্ত মেহেদি রাখা যায়। এর বেশি উচিত নয়।
  • সরাসরি শুধুমাত্র মেহেদী পাতা না লাগানোই ভালো।
  • বাজারে প্রাপ্ত প্যাকেটকৃত মেহেদী পাতার পরিবর্তে প্রাকৃতিক উপায়ে মেহেদী পাতা বেটে মাথায় লাগানো ভালো।
  • মেহেদি প্যাক তৈরি করার ক্ষেত্রে মেহেদি পাতার সাথে হালকা গরম পানি মিশিয়ে ব্যবহার করবেন।
  • চুলে মেহেদী ব্যবহারের পর অবশ্যই শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।

 

মেহেদি পাতার সঠিক ব্যবহার:

চুলের যত্নে মেহেদি পাতার উপকারিতা ও ব্যবহার করার উপায়:

মেহেদি পাতা চুলের যত্নে একটি অত্যন্ত কার্যকরী উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়, এবং এর প্রাকৃতিক গুণাগুণ চুলকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। রাসায়নিক রঙের পরিবর্তে মেহেদি পাতা চুলকে ঘন, রেশমী এবং রঙিন করতে সহায়ক। তবে সঠিকভাবে ব্যবহার না করলে মেহেদির উপকারিতা কমে যায় এবং চুলের ক্ষতিও হতে পারে।

সঠিকভাবে ব্যবহার করলে মেহেদি পাতা চুলের যত্নে একটি অসাধারণ প্রাকৃতিক উপায় হয়ে উঠতে পারে।

 

মেহেদী নামেই পরিচিত। হাত সাজানোর পাশাপাশি এটি চুলেও ব্যবহার করা যায়। অনেকেই পাকা চুল কৃত্রিম উপায়ে রঙিন করার জন্য মেহেদি পাতার ব্যবহার করে থাকেন।

দীর্ঘজীবী এই মেহেদী উদ্ভিদের পাতার পাশাপাশি ফুল এবং ফুল থেকে ফলও উৎপন্ন হতে দেখা যায়। প্রাচীনকালে মেহেদির ফুল থেকে সুগন্ধি উৎপন্ন করা হতো যার উৎপাদন বর্তমানে আবারও শুরু হয়েছে।

মেহেদির পাতায় প্রধানত লসোন থাকে এবং যে গাছে লসোন বেশি থাকে সে গাছের ফলে বীজ উৎপন্ন কম হয়। জেনে রাখা ভালো মেহেদী পেস্ট এর পিএইচ মান 5.5 হলে এর কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।

 

  • মেহেদি রস প্রস্তুত করা: মেহেদি পাতার পেস্ট তৈরি করে একটি পাতলা কাপড়ের মাধ্যমে রসটুকু বের করে নিন। এই রস সরাসরি চুল এবং মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করে লাগান।
  • সময় দিতে হবে: মেহেদি রস মাথায় লাগানোর পর ৪-৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। এটি চুলের গোড়ায় প্রবেশ করে চুলকে মজবুত করতে সাহায্য করবে।
  • শ্যাম্পু দিয়ে ধোয়া: সময় শেষে ভালো মানের শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে নিন। এটি চুলের মসৃণতা বজায় রাখবে এবং রুক্ষ হওয়া থেকে রক্ষা করবে।
  • প্রাকৃতিক রং প্রদান: এটি চুলের রংকে প্রাকৃতিকভাবে উজ্জ্বল করে এবং ধূসর চুলকে ঢেকে দেয়।
  • চুলের রুক্ষতা দূর করা: মেহেদি পাতা প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে এবং চুলকে নরম ও রেশমী রাখে।

 

 

চুলের যত্নে সরিষার তেল ও মেহেদি

চুলের যত্নে সরিষার তেল ও মেহেদী পাতার ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। চুলে মেহেদি ব্যবহারের পর সরিষার তেল মেখে পরের দিন শ্যাম্পু করলে তা কন্ডিশনার এর মত কাজ করে। কারণ মেহেদি পাতায় রয়েছে ভিটামিন ই ও ট্যানিন। এবং সরিষার তেলের উপকারিতা সম্পর্কে কমবেশি আমাদের সবারই ধারণা রয়েছে। ফলে সরিষার তেলের সাথে মেহেদি পাতা ব্যবহারে চুল হয় ঝলমলে মসৃণ এবং তা দীর্ঘস্থায়ী হয়।

যাদের চুল তৈলাক্ত নয় বরং শুষ্ক  তাদের চুলে সরাসরি মেহেদী পাতা ব্যবহারে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এক্ষেত্রে মেহেদি পাতার সাথে সরিষার তেল ব্যবহার করলে চুলের শুষ্কতা থাকে না। তবে চুলে অধিক পরিমাণ সরিষার তেল ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

 

মেহেদি পাতা দিয়ে চুলের যত্ন

মেহেদি পাতা প্রাকৃতিকভাবে শুকিয়ে গুড়া করে নিয়ে সারা বছর ঘরে রেখে সংরক্ষণ করতে পারেন। মেহেদি পাতা গুড়া দিয়ে চুলের যত্ন নিলে চুল দ্বিগুণ পুষ্টি পাবে, গোড়া মজবুত হবে এবং চুল কালো হবে। চলুন জেনে নেই মেহেদি পাতা দিয়ে চুলের যত্ন করবেন কিভাবে?

  • মেহেদি পাতার গুড়োর সাথে আমরা পাউডার, এক চা চামচ কফি, চা ভেজানো পানি এবং লেবুর রস মিশিয়ে ব্যবহার করলে চুল মজবুত হবে,
  • প্রাকৃতিকভাবে গুড়ো করা মেহেদী মাসে অন্তত দুইবার ব্যবহার করলে চুলের অকালপক্কতা রোধ হয়,
  • মেহেদি পাতার পেস্টের সাথে ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করলে মাথার ত্বকের জ্বালাপোড়া দূর হয়,
  • ফুটানো তিলের তেলের সাথে পরিমাণ মতো মেহেদী পাতার গুড়া মিশিয়ে মাথায় ব্যবহার করলে চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়।

 

মেহেদী পাতার হেয়ার প্যাক

মেহেদি পাতার জনপ্রিয় একটি হেয়ার প্যাক সম্পর্কে নিচে বর্ণনা করা হলো:

২ টেবিল চামচ চা পাতা গরম পানিতে ফুটিয়ে নিন। পানি ছেঁকে আলাদা করে এর সাথে পরিমাণ মতো মেহেদী পাতার গুড়া মিশিয়ে একটি ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এই মিশ্রণের সাথে যোগ করুন ২ টেবিল চামচ লেবুর রস এবং দুই টেবিল চামচ টক দই। শ্যাম্পু করার আগে মাথায় অন্তত এক ঘন্টা রেখে দিন। এই প্যাকটি যেদিন ব্যবহার করবেন সেদিন অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করতে ভুলবেন না।

ভুলভাবে মেহেদি ব্যবহারের কারণে চুলের ক্ষতি

সুন্দর চুলের আশায় অনেকেই মেহেদি ব্যবহার করেন। তবে হেনা বা মেহেদি চুলের জন্য উপকারী নাকি ক্ষতিকর, তা অনেকেই জানেন না। রাসায়নিক পদ্ধতিতে চুল রঙিন করার চেয়ে মেহেদি ব্যবহার অনেক বেশি উপকারী। চুলের গোড়া মজবুত করা, চুলকে রেশমী ও ঘন করা এবং খুশকির সমস্যা সমাধানেও মেহেদির ব্যবহার কার্যকরী। যারা চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন, তারা নিয়মিত মেহেদি ব্যবহার করতে পারেন, কারণ এটি প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে এবং চুলের গোড়াকে মজবুত করে তোলে। তবে চুলে মেহেদির সঠিক ব্যবহার না জানলে এর উপকারিতা না পাওয়ার পাশাপাশি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন। সাধারণত, বেশিরভাগ মানুষ মেহেদি পাতার পেস্ট তৈরি করে সরাসরি চুলে লাগিয়ে দেন। কিন্তু এভাবে করা মোটেও ঠিক নয়। চুল এবং মাথার ত্বকে মেহেদির পূর্ণ গুণাগুণ পেতে হলে, মেহেদি পেস্ট তৈরি করে পাতলা কাপড় দিয়ে ছেঁকে এর রস বের করে নিতে হবে। তারপর সেই রস মাথার ত্বক এবং চুলে ম্যাসাজ করে লাগাতে হবে। এরপর ৪-৫ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে। তারপর ভালো ব্র্যান্ডের কোনো শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এভাবে মেহেদি ব্যবহারে অপ্রয়োজনীয় পাতার অংশ চুলের গোড়ায় আটকে চুলের ক্ষতি করবে না, চুল রুক্ষ ও নির্জীব হবে না। বরং মেহেদি পেস্টের রসে চুল হবে ঘন, কালো এবং ঝলমলে, যা সবার নজর কাড়বে।

 

আরো পড়ুন: চুলের যত্নে ডিম ও টক দই

 

সর্বাধিক জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী

১)চুলে কতক্ষণ মেহেদী রাখা উচিত?

উঃ চুলে সর্বোচ্চ ১ থেকে ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত মেহেদী পাতা লাগিয়ে রাখা যাবে।

২)কালার করার জন্য চুলে মেহেদি কতক্ষণ রাখতে হয়?

উঃ চুল কালার করার জন্য অথবা পাকা চুলে উজ্জ্বল লাল রং করার জন্য মেহেদি পাতা মাথায় তিন থেকে চার ঘন্টা রাখবেন।

৩)মেহেদি লাগানোর পর চুলে শ্যাম্পু করা যাবে কি?

উঃ মেহেদি পাতা লাগানোর পর চুলে শ্যাম্পু ব্যবহার করার থেকে কন্ডিশনার ব্যবহার করা বেশি ভালো।

Spread the love

2 thoughts on “চুলের যত্নে মেহেদি পাতার উপকারিতা ও ব্যবহার”

Leave a Comment