বয়স অনুযায়ী বাচ্চার ওজন ও উচ্চতা বিস্তারিত ভাবে জানুন !

সন্তানের পেছনে খাবারের প্লেট হাতে দৌড়ানোর অভ্যাস বেশ সাধারণ, কারণ প্রতিটি মা চান তার সন্তান সঠিকভাবে বেড়ে উঠুক। শিশুর সঠিক ওজন বৃদ্ধি এবং পুষ্টির বিষয়ে সচেতন হওয়াটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর সঠিক বৃদ্ধি পেতে সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত ঘুম, এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা অপরিহার্য সুতরাং, আজকের ব্লগে আমরা যেসব বিষয় জানবো তা হল : বয়স অনুযায়ী বাচ্চার ওজন ও উচ্চতা , বয়স অনুযায়ী বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত, বয়স অনুযায়ী বাচ্চার ওজন ও উচ্চতা, গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত, জন্মের সময় শিশুর ওজন কত হওয়া উচিত, বয়স অনুযায়ী বাচ্চার উচ্চতা কত হওয়া উচিত, বয়স অনুযায়ী মেয়ে বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত, ৪ মাসের বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত, শিশুর ওজন কম হলে করনীয়, ৩ বছরের বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত

বয়স অনুযায়ী বাচ্চার ওজন ও উচ্চতা

বাচ্চাদের বয়স অনুযায়ী ওজন এবং উচ্চতা বৃদ্ধির একটি সাধারণ প্যাটার্ন রয়েছে যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট মান অনুসরণ করে। যদিও প্রতিটি শিশুর বৃদ্ধি আলাদা হতে পারে, একটি গড় প্যাটার্নের ওপর ভিত্তি করে বাচ্চার বৃদ্ধির হার নির্ধারণ করা হয়। এখানে একটি সাধারণ গাইডলাইন দেওয়া হলো যা বয়স অনুযায়ী শিশুর গড় ওজন ও উচ্চতা সম্পর্কে ধারণা দেয়:

০-১২ মাস বয়সী শিশুর ওজন ও উচ্চতা:

  • ১ মাস:
    • ওজন: ৩.৫-৪.৫ কেজি
    • উচ্চতা: ৫০-৫৫ সেমি
  • ৩ মাস:
    • ওজন: ৫-৬.৫ কেজি
    • উচ্চতা: ৫৭-৬০ সেমি
  • ৬ মাস:
    • ওজন: ৭-৮.৫ কেজি
    • উচ্চতা: ৬৫-৬৭ সেমি
  • ৯ মাস:
    • ওজন: ৮-৯.৫ কেজি
    • উচ্চতা: ৭০-৭৫ সেমি
  • ১২ মাস:
    • ওজন: ৮.৫-১০ কেজি
    • উচ্চতা: ৭৫-৮০ সেমি

১-৫ বছর বয়সী শিশুর ওজন ও উচ্চতা:

  • ১ বছর:
    • ওজন: ৮.৫-১০ কেজি
    • উচ্চতা: ৭৫-৮০ সেমি
  • ২ বছর:
    • ওজন: ১০-১২.৫ কেজি
    • উচ্চতা: ৮৫-৯০ সেমি
  • ৩ বছর:
    • ওজন: ১২-১৪.৫ কেজি
    • উচ্চতা: ৯০-৯৫ সেমি
  • ৪ বছর:
    • ওজন: ১৩.৫-১৬ কেজি
    • উচ্চতা: ৯৫-১০০ সেমি
  • ৫ বছর:
    • ওজন: ১৪.৫-১৮ কেজি
    • উচ্চতা: ১০৫-১১০ সেমি

৬-১২ বছর বয়সী শিশুর ওজন ও উচ্চতা:

  • ৬ বছর:
    • ওজন: ১৬-২১ কেজি
    • উচ্চতা: ১১০-১১৫ সেমি
  • ৭ বছর:
    • ওজন: ১৮-২৩ কেজি
    • উচ্চতা: ১১৫-১২০ সেমি
  • ৮ বছর:
    • ওজন: ২০-২৬ কেজি
    • উচ্চতা: ১২০-১২৫ সেমি
  • ৯ বছর:
    • ওজন: ২২-৩০ কেজি
    • উচ্চতা: ১২৫-১৩০ সেমি
  • ১০ বছর:
    • ওজন: ২৪-৩২ কেজি
    • উচ্চতা: ১৩০-১৩৫ সেমি
  • ১১ বছর:
    • ওজন: ২৬-৩৫ কেজি
    • উচ্চতা: ১৩৫-১৪০ সেমি
  • ১২ বছর:
    • ওজন: ২৮-৪০ কেজি
    • উচ্চতা: ১৪০-১৪৫ সেমি

১৩-১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীর ওজন ও উচ্চতা:

  • এই বয়সে ছেলেমেয়েদের বৃদ্ধির হার দ্রুত হয়, এবং ওজন ও উচ্চতা অনেকটাই ভিন্ন হতে পারে। কিশোরদের উচ্চতা এবং ওজন তাদের জেনেটিক্স, পুষ্টি এবং হরমোনের উপর নির্ভর করে।

উল্লেখ্য, এই মানগুলো সাধারণ গাইডলাইন। বাচ্চাদের বৃদ্ধিতে ভিন্নতা থাকতে পারে, যা স্বাভাবিক। কোনো উদ্বেগ থাকলে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

জনপ্রিয় ব্লগ ১ : গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ, কিভাবে বুঝবেন ?

জনপ্রিয় ব্লগ ২ : গর্ভবতী মহিলার গর্ভাবস্থায় বমি হলে কার্যকরী কিছু করণীয় কাজ

জনপ্রিয় ব্লগ ৩ : সিজারের পর মায়ের যত্ন কিভাবে নিবেন

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত

গর্ভাবস্থায় একজন মহিলার শরীরের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়া জরুরি, কারণ মায়ের শারীরিক অবস্থা সরাসরি গর্ভের শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশে প্রভাব ফেলে। গর্ভাবস্থায় সঠিক পুষ্টি গ্রহণ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন শিশুর সঠিক ওজন বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় শিশুর ওজন বৃদ্ধি ধীরে ধীরে ঘটে এবং এটি গর্ভাবস্থার বিভিন্ন পর্যায়ে ভিন্ন হতে পারে। নিচে গর্ভাবস্থার সপ্তাহ অনুযায়ী বাচ্চার গড় ওজনের একটি ধারণা দেওয়া হলো:

গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত

প্রথম ত্রৈমাসিক (০-১২ সপ্তাহ):

প্রথম ত্রৈমাসিকে শিশুর ওজন সাধারণত খুব কম থাকে। ১২ সপ্তাহ শেষে শিশুর ওজন প্রায় ১৪ গ্রাম হতে পারে।

দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (১৩-২৮ সপ্তাহ):

২০ সপ্তাহে: প্রায় ৩০০ গ্রাম

২৪ সপ্তাহে: প্রায় ৬০০ গ্রাম

তৃতীয় ত্রৈমাসিক (২৯-৪০ সপ্তাহ):

৩০ সপ্তাহে: প্রায় ১.৪ কেজি

৩৪ সপ্তাহে: প্রায় ২.২ কেজি

৩৬ সপ্তাহে: প্রায় ২.৭ কেজি

৩৮ সপ্তাহে: প্রায় ৩ কেজি

৪০ সপ্তাহে (পূর্ণ মেয়াদে): প্রায় ৩.২ থেকে ৩.৬ কেজি

গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:

গর্ভাবস্থার শেষ দিকে শিশুর ওজন দ্রুত বাড়তে থাকে।

প্রতিটি শিশুর বৃদ্ধির হার আলাদা হতে পারে। গড় ওজন থেকে কিছুটা কম বা বেশি হওয়া সাধারণত স্বাভাবিক।

যদি শিশুর ওজন সম্পর্কে কোনো উদ্বেগ থাকে, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নিয়মিত আল্ট্রাসাউন্ডের মাধ্যমে শিশুর বৃদ্ধি পর্যবেক্ষণ করা যায় এবং সঠিকভাবে তার ওজন নির্ধারণ করা সম্ভব।

জন্মের সময় শিশুর ওজন কত হওয়া উচিত

বহু বাবা-মায়ের মতো আপনিও আপনার শিশুর আদর্শ ওজন নিয়ে চিন্তিত থাকতে পারেন। বিশেষ করে প্রথমবার সন্তানের জন্মের সময় মা-বাবারা উদ্বিগ্ন থাকেন যে শিশুর ওজন স্বাভাবিক তালিকার মধ্যে আছে কিনা। জন্মের সময় সাধারণত একটি পূর্ণ মেয়াদে জন্ম নেওয়া (৩৭-৪০ সপ্তাহের মধ্যে) শিশুর গড় ওজন ২.৫ কেজি থেকে ৪ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে, এর কিছুটা কম বা বেশি হওয়া স্বাভাবিক হতে পারে এবং শিশুর স্বাস্থ্য নির্ভর করে বিভিন্ন উপাদানের ওপর, যেমন:

সাধারণ গাইডলাইন:

সাধারণ গড় ওজন: ২.৫ কেজি থেকে ৪ কেজি

কম ওজনের শিশু: ২.৫ কেজির নিচে (Low Birth Weight – LBW)

উচ্চ ওজনের শিশু: ৪ কেজির বেশি (Macrosomia)

শিশুর ওজন প্রভাবিত করে যেসব বিষয়:

মায়ের স্বাস্থ্য: গর্ভাবস্থায় মায়ের পুষ্টি, ওজন, এবং স্বাস্থ্যগত অবস্থা শিশুর জন্মের সময় ওজনকে প্রভাবিত করে।

গর্ভকালীন সময়: যদি শিশু পূর্ণ মেয়াদে জন্ম নেয়, তার ওজন সাধারণত স্বাভাবিক থাকে। অপরিপক্ক বা প্রিম্যাচিউর (৩৭ সপ্তাহের আগে জন্ম) শিশুর ওজন কম হতে পারে।

জেনেটিক্স: শিশুর ওজন তার পারিবারিক জিনগত বৈশিষ্ট্যের ওপরও নির্ভর করে।

মায়ের খাওয়া-দাওয়া ও জীবনযাপন: গর্ভাবস্থায় মায়ের খাদ্যাভ্যাস, ধূমপান, অ্যালকোহল গ্রহণ ইত্যাদি শিশুর ওজনের ওপর প্রভাব ফেলে।

জন্মের সময় শিশুর ওজন একটি গুরুত্বপূর্ণ মাপকাঠি, তবে শিশুর সামগ্রিক স্বাস্থ্য ও বিকাশ নির্ভর করে অন্যান্য অনেক ফ্যাক্টরের ওপরও।

 

বয়স অনুযায়ী বাচ্চার উচ্চতা কত হওয়া উচিত

আপনার সদ্যজাত শিশুর স্বাস্থ্যের দিকে নজর রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।  বাচ্চাদের বয়স অনুযায়ী উচ্চতা ভিন্ন হতে পারে এবং এটি জিনগত, পুষ্টি, স্বাস্থ্য, ও পরিবেশের উপর নির্ভর করে। তবে সাধারণভাবে নিম্নলিখিত তালিকাটি বয়স অনুযায়ী বাচ্চার উচ্চতা কত হওয়া উচিত, এ ব্যাপারে একটি  গড় ধারণা দিতে পারে:

মেয়েদের জন্য উচ্চতার গড়:

১ বছর: ৭৪ সেমি (২৯ ইঞ্চি)

২ বছর: ৮৫ সেমি (৩৩ ইঞ্চি)

৩ বছর: ৯৫ সেমি (৩৭ ইঞ্চি)

৪ বছর: ১০২ সেমি (৪০ ইঞ্চি)

৫ বছর: ১০৮ সেমি (৪৩ ইঞ্চি)

৬ বছর: ১১৫ সেমি (৪৫ ইঞ্চি)

৭ বছর: ১২০ সেমি (৪৭ ইঞ্চি)

৮ বছর: ১২৫ সেমি (৪৯ ইঞ্চি)

৯ বছর: ১৩০ সেমি (৫১ ইঞ্চি)

১০ বছর: ১৩৫ সেমি (৫৩ ইঞ্চি)

 

ছেলেদের জন্য উচ্চতার গড়:

১ বছর: ৭৬ সেমি (৩০ ইঞ্চি)

২ বছর: ৮৮ সেমি (৩৪ ইঞ্চি)

৩ বছর: ৯৭ সেমি (৩৮ ইঞ্চি)

৪ বছর: ১০৫ সেমি (৪১ ইঞ্চি)

৫ বছর: ১১২ সেমি (৪৪ ইঞ্চি)

৬ বছর: ১১৭ সেমি (৪৬ ইঞ্চি)

৭ বছর: ১২২ সেমি (৪৮ ইঞ্চি)

৮ বছর: ১২৭ সেমি (৫০ ইঞ্চি)

৯ বছর: ১৩৩ সেমি (৫২ ইঞ্চি)

১০ বছর: ১৩৮ সেমি (৫৪ ইঞ্চি)

এটি শুধুমাত্র একটি গড় হিসাব। প্রতিটি বাচ্চার বৃদ্ধি তাদের নিজস্ব অনন্য গতিতে হয়, তাই যদি কোনো বিশেষ উদ্বেগ থাকে, পেডিয়াট্রিশিয়ানের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

 

বয়স অনুযায়ী মেয়ে বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত

বয়স অনুযায়ী মেয়ে বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত এ ব্যাপারে ধারণা দিতে নিম্নে একটি গড় তালিকা দেওয়া হলো। এটি শুধুমাত্র একটি গাইডলাইন, কারণ প্রতিটি শিশুর বৃদ্ধি তাদের জিনগত বৈশিষ্ট্য, পুষ্টি এবং পরিবেশের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে।

বয়স অনুযায়ী মেয়ে বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত

মেয়ে বাচ্চার গড় ওজন :

১ বছর: ৭.৫ – ১০ কেজি

২ বছর: ৯ – ১৩ কেজি

৩ বছর: ১১ – ১৫ কেজি

৪ বছর: ১২ – ১৭ কেজি

৫ বছর: ১৩ – ১৯ কেজি

৬ বছর: ১৫ – ২২ কেজি

৭ বছর: ১৭ – ২৫ কেজি

৮ বছর: ১৮ – ২৭কেজি

৯ বছর: ২০ – ৩১ কেজি

১০ বছর: ২২ – ৩৪ কেজি

এটি একটি গড় মাপ মাত্র। প্রতিটি শিশুর ওজন এবং বৃদ্ধি ভিন্ন হতে পারে, তাই কোনো উদ্বেগ থাকলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। শিশুর ওজনের পাশাপাশি তার সার্বিক স্বাস্থ্যের দিকেও নজর দেওয়া 

 

৪ মাসের বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত

বাচ্চার ওজন এবং বৃদ্ধি নিয়ে বাবা-মায়ের দুশ্চিন্তা খুবই স্বাভাবিক। জন্মের সময় শিশুর ওজন বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ৪ মাসের বাচ্চার ওজন সাধারণত ৫.৫ থেকে ৮ কেজির মধ্যে হওয়া উচিত। তবে এটি বাচ্চার জন্মের ওজন, পুষ্টি, এবং স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে। চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে বাচ্চার ওজন ঠিক আছে কিনা তা নিশ্চিত করা উচিত।

শিশুর ওজন কম হলে করনীয়

কিছু ফল খুব বেশি খেলে বা একদমই না খেলে স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, ঠিক তেমনই শিশুর ওজনও একটি সঠিক সীমার মধ্যে থাকা জরুরি। ওজন খুব বেশি বা খুব কম হলে, উভয় অবস্থাতেই শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

শিশুর ওজন কম হলে বাবা-মায়েদের জন্য এটি চিন্তার কারণ হতে পারে। তবে সঠিক যত্ন এবং পুষ্টির মাধ্যমে শিশুর ওজন বৃদ্ধি করা সম্ভব। ওজন কম হলে কী কী করণীয় তা নিচে তুলে ধরা হলো:

 

১. পর্যাপ্ত বুকের দুধ প্রদান:

শিশুর জন্য মায়ের দুধ সবচেয়ে পুষ্টিকর খাবার। এটি শিশুর ওজন বৃদ্ধির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রথম ছয় মাসের মধ্যে শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের দুধ (এক্সক্লুসিভ ব্রেস্টফিডিং) খাওয়ানো উচিত।

২. সঠিক সময়ে খাওয়ানো:

শিশুকে নির্দিষ্ট সময় পর পর খাওয়ানো উচিত। নবজাতক শিশুকে দিনে ৮-১২ বার বা তার বেশি খাওয়াতে হতে পারে। সময়মতো খাওয়ানোর অভ্যাস শিশুর ওজন বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

৩. খাদ্যতালিকা পর্যালোচনা (৬ মাসের পরে):

৬ মাসের পরে ধীরে ধীরে সলিড খাবার (যেমন ফলের পিউরি, সবজির পিউরি, চালের মাড় ইত্যাদি) শিশুর খাদ্যতালিকায় যোগ করুন। তবে মায়ের দুধ চালিয়ে যান।

৪. স্বাস্থ্য পরীক্ষা:

শিশুর ওজন কম হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ওজন কমার কারণ যদি কোনো শারীরিক অসুস্থতা হয়, তবে চিকিৎসক সঠিক চিকিৎসা দিয়ে থাকবেন।

৫. ঘুমের প্রয়োজন:

পর্যাপ্ত ঘুম শিশুর শারীরিক এবং মানসিক বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত জরুরি। শিশুর ঘুমের রুটিন ঠিক রাখতে হবে, কারণ ঘুমের সময় শিশুর বৃদ্ধি হয়।

৬. পরিবেশ ও যত্ন:

শিশুকে একটি স্বাস্থ্যকর, পরিষ্কার এবং স্নেহময় পরিবেশে রাখতে হবে। পরিবার এবং আশপাশের মানুষের ভালোবাসা ও যত্ন শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশে সাহায্য করে।

যদি এসব নিয়ম মেনে চলার পরও শিশুর ওজন সঠিকভাবে না বাড়ে, তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

 

৩ বছরের বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত

একটি ৩ বছরের বাচ্চার ওজন সাধারণত ১২ থেকে ১৬ কেজি হওয়া উচিত। তবে এটি বাচ্চার দৈহিক বৃদ্ধি, পুষ্টি এবং স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে। প্রতিটি শিশুর বৃদ্ধি আলাদা হতে পারে, তাই যদি আপনার বাচ্চার ওজন এই সীমার বাইরে থাকে, তবে শিশুর ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত। সদ্যজাত শিশুর স্বাস্থ্যের প্রতি সব বাবা-মা’ই খুবই সতর্ক থাকেন, এবং এটি স্বাভাবিক। শিশুর ওজন বা শারীরিক গঠন নিয়ে দুশ্চিন্তা অনেক সময় বাবা-মায়ের মধ্যে অস্থিরতা তৈরি করতে পারে। 

উপসংহার:

বাচ্চার স্বাস্থ্য সঠিকভাবে নির্ধারণের জন্য ওজন একটি গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড। বয়স অনুযায়ী বাচ্চার ওজনের একটি আদর্শ সীমা থাকলেও, প্রতিটি শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি আলাদা হতে পারে এবং সেটি নির্ভর করে জিনগত বৈশিষ্ট্য, পুষ্টি, এবং সামগ্রিক জীবনধারার উপর। বাবা-মায়ের উচিত শিশুর পুষ্টি ও স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল থাকা, কিন্তু একসঙ্গে দুশ্চিন্তামুক্ত থাকাও জরুরি। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং বিশেষজ্ঞের পরামর্শে শিশুর বৃদ্ধি নিশ্চিত করা ভালো। মনে রাখতে হবে, প্রতিটি শিশু অনন্য এবং তাদের বৃদ্ধি ও বিকাশের সময় আলাদা হতে পারে। সুতরাং, শিশুকে ভালোবাসা, সঠিক পুষ্টি এবং যত্ন দিয়ে বড় করাই প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত।

Spread the love

Leave a Comment