শীতকালে ত্বকের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শীতের শুষ্ক ও ঠান্ডা আবহাওয়া ত্বককে রুক্ষ এবং প্রাণহীন করে দিতে পারে। এ সময় ত্বকের সঠিক যত্ন না নিলে চামড়া ফেটে যাওয়া, শুষ্কতা এবং খসখসে অনুভূতি হতে পারে। তাই, শীতের রুক্ষতার সঙ্গে লড়াই করতে হলে দরকার কিছু সহজ ও কার্যকর উপায়।
এই ব্লগে আমরা শীতে ত্বকের যত্ন নেওয়ার বিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবো এবং এমন কিছু দরকারী উপায় জানাবো, যা আপনার ত্বককে কোমল, আর্দ্র ও সুস্থ রাখতে সহায়তা করবে।
শীতকালে ত্বকের যত্ন
শীতকালে ত্বকের শুষ্কতা ও রুক্ষতা আমাদের অনেকের জন্য একটি সাধারণ সমস্যা। এই মৌসুমে ঠান্ডা আবহাওয়া, কম আর্দ্রতা, এবং শীতল বাতাস ত্বককে শুষ্ক ও প্রাণহীন করে তোলে। সঠিক যত্নের মাধ্যমে শীতকালেও ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখা সম্ভব। আসুন জেনে নিই “শীতকালে ত্বকের যত্ন” নেওয়ার কিছু কার্যকর টিপস।
শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় বলে ত্বককে আর্দ্র রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গোসলের পর এবং দিনে ২-৩ বার ময়েশ্চারাইজার লাগান। ত্বকের ধরন অনুযায়ী একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। নারকেল তেল, অলিভ অয়েল, বা বাদামের তেল ত্বকে লাগালে এটি প্রাকৃতিকভাবে আর্দ্রতা ধরে রাখে।
গরম পানি দিয়ে গোসল করলে ত্বকের প্রাকৃতিক তেল নষ্ট হয়ে যায়, যা ত্বককে আরও শুষ্ক করে তোলে। কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন এবং গোসলের সময় খুব দীর্ঘ করবেন না। গোসলের পরপরই ময়েশ্চারাইজার লাগান।
শীতকালে ঠোঁট ফাটার সমস্যা বেশি হয়। শিয়া বাটার বা ভিটামিন ই যুক্ত লিপ বাম ব্যবহার করুন। ঠোঁটে নারকেল তেল বা মধু লাগালে ঠোঁট নরম থাকবে।
শীতকালেও সূর্যের UV রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। SPF ৩০ বা তার বেশি যুক্ত সানস্ক্রিন বেছে নিন।
শীতকালে কম পানি পান করার প্রবণতা থাকে, যা ত্বকের শুষ্কতা বাড়ায়। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। ফলের রস এবং স্যুপের মতো তরল খাবার গ্রহণ করুন।
স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ত্বক ভালো রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন এ, সি, এবং ই সমৃদ্ধ খাবার যেমন কমলা, গাজর, পেঁপে ইত্যাদি ত্বকের জন্য উপকারী। মাছ, বাদাম, এবং চিয়া সিড খেলে ত্বক মসৃণ থাকবে।
মৃত ত্বক দূর করার জন্য এক্সফোলিয়েশন প্রয়োজন। সপ্তাহে একবার একটি মৃদু স্ক্রাব ব্যবহার করুন। চালের গুঁড়ো বা ওটমিল দিয়ে প্রাকৃতিক স্ক্রাব তৈরি করুন।
শীতকালে ঘরের শুষ্ক বাতাস ত্বকের ক্ষতি করতে পারে। হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করুন যা ঘরের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে। ঘরে কিছু ইনডোর প্ল্যান্ট রাখলে প্রাকৃতিকভাবে আর্দ্রতা বাড়ে।
শীতকালে হাত ও পা শুষ্ক হয়ে ফাটতে পারে। ঠান্ডা থেকে হাত ও পা রক্ষা করতে গ্লাভস এবং মোজা পরুন। হাত-পায়ে তেল বা ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
ঘুম এবং মানসিক চাপের প্রভাব ত্বকের উপর পড়ে। প্রতিদিন ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন। ধ্যান বা যোগব্যায়াম করুন মানসিক চাপ কমানোর জন্য।
শীতকালে ত্বকের যত্ন নেওয়া একটু বাড়তি মনোযোগের প্রয়োজন। উপরোক্ত টিপসগুলো মেনে চললে শীতের শুষ্ক আবহাওয়ার মধ্যেও ত্বক থাকবে কোমল, উজ্জ্বল এবং স্বাস্থ্যকর। “শীতকালে ত্বকের যত্ন” নিতে নিজের জন্য একটি সঠিক রুটিন তৈরি করুন এবং নিয়মিত তা মেনে চলুন।
শীতে ত্বকের যত্নে ঘরোয়া উপায়
শীতকালের শুষ্ক ও ঠান্ডা আবহাওয়ায় ত্বক রুক্ষ ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে, তবে ঘরোয়া উপায়ে এটি সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। মধু ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়ক একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এটি সরাসরি ত্বকে লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেললে ত্বক নরম ও মসৃণ হয়।
একইভাবে, দই ব্যবহার করেও ত্বকের যত্ন নেওয়া যায়। এক চামচ দইয়ের সঙ্গে সামান্য হলুদ মিশিয়ে মুখে লাগালে ত্বকের শুষ্কতা কমে এবং উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়।
নারকেল তেল শীতকালে ত্বকের জন্য একটি কার্যকর সমাধান। রাতে ঘুমানোর আগে হালকা গরম নারকেল তেল ত্বকে ম্যাসাজ করলে এটি গভীরভাবে পুষ্টি জোগায় এবং রুক্ষতা দূর করে।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে কাঁচা দুধ ও মধুর মিশ্রণও ব্যবহার করা যেতে পারে। এক চামচ কাঁচা দুধ ও আধা চামচ মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেললে ত্বক হয়ে ওঠে কোমল ও উজ্জ্বল।
গ্লিসারিনও শীতকালের ত্বকের যত্নে অত্যন্ত উপকারী। সমপরিমাণ গ্লিসারিন ও গোলাপজল মিশিয়ে রাতে ত্বকে লাগালে এটি শুষ্কতা দূর করে এবং ত্বক আর্দ্র রাখে।
এছাড়া, শীতে বেশি গরম পানি এড়িয়ে চলা, পর্যাপ্ত পানি পান করা এবং বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে ময়েশ্চারাইজার ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা অত্যন্ত জরুরি। এই ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো নিয়মিত মেনে চললে শীতকালেও ত্বক থাকবে কোমল, মসৃণ এবং উজ্জ্বল।
শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির উপায়
শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে কিছু সহজ ও কার্যকরী উপায় রয়েছে। প্রথমত, শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, তাই নিয়মিত ময়েশ্চারাইজিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ময়েশ্চারাইজার ত্বককে আর্দ্র এবং নরম রাখতে সাহায্য করে, যা ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
এছাড়া, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ সিরাম ব্যবহার করা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধির জন্য খুবই উপকারী। এটি ত্বকের কালো দাগ দূর করে এবং কলাগেন উৎপাদন বাড়ায়। ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর UV রশ্মি থেকে রক্ষা করতে সানস্ক্রিন ব্যবহার অবশ্যই করা উচিত, কারণ শীতে সূর্যের রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করতে পারে।
তবে শুধু বাহ্যিক যত্ন নয়, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে উপযুক্ত পুষ্টি গ্রহণও জরুরি। ফল ও সবজি, বিশেষ করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার মাধ্যমে ত্বক ভিতর থেকে সুস্থ থাকে। ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে সপ্তাহে এক বা দুইবার ফেস স্ক্রাব বা প্যাক ব্যবহার করা ত্বককে সতেজ এবং উজ্জ্বল রাখে।
এছাড়া, গরম জলে গোসল না করে, মৃদু গরম পানিতে গোসল করলে ত্বক আর্দ্র থাকে এবং শুষ্ক হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমে। সবশেষে, প্রচুর পানি পান করা ত্বককে ভিতর থেকে হাইড্রেটেড রাখে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা ও স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। রাতে ত্বকের ভালো যত্ন নিতে হালকা ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম বা অয়েল ব্যবহার করাও উপকারি।
এই সব বিষয়গুলো মাথায় রেখে শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখা সম্ভব।
শীতকালে মুখে কি মাখা উচিত
শীতকালে মুখের ত্বক শুষ্ক এবং রুক্ষ হয়ে যায়, তাই বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। শীতের মধ্যে ত্বকের সঠিক যত্ন নিতে কিছু বিশেষ পণ্য ব্যবহার করা উচিত। প্রথমত, সাধারণ ময়েশ্চারাইজার নয়, শুধুমাত্র সেরামাইড এবং জোজোবা অয়েল সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত।
এগুলো ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সহায়ক এবং ত্বককে গভীরভাবে হাইড্রেট করে। সেরামাইড ত্বকের প্রাকৃতিক বাধা শক্তিশালী করে এবং ত্বককে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করে, আর জোজোবা অয়েল ত্বককে নরম এবং মসৃণ রাখে।
মুখ ধোয়ার পর ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে, প্রতিবার মুখ ধোয়ার পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা জরুরি। ত্বক যদি শুষ্ক হয়ে যায়, তাহলে ত্বকের আর্দ্রতা ফেরাতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের অভ্যাস তৈরি করা উচিত।
ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখার জন্য হাইলোরনিক অ্যাসিড এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে। হাইলোরনিক অ্যাসিড ত্বকের গভীরে আর্দ্রতা প্রবাহিত করে এবং ত্বককে সতেজ রাখে, আর ল্যাকটিক অ্যাসিড ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল এবং মসৃণ রাখে।
এছাড়া, শীতকালে ত্বক শুষ্কতা এবং ফেটে যাওয়ার সমস্যা এড়াতে, হালকা ফেস অয়েল ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন, আর্গান অয়েল বা জোজোবা অয়েল ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে সাহায্য করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল ও সুস্থ রাখে। শীতে ত্বকের অতিরিক্ত শুষ্কতা থেকে রক্ষা পেতে পেট্রোলিয়াম জেলি বা হালকা ক্রিম ব্যবহার করা উপকারী।
মুখে সানস্ক্রিন ব্যবহার করাও জরুরি, কারণ শীতেও সূর্যের UV রশ্মি ত্বকে ক্ষতি করতে পারে। এছাড়া, ভিটামিন সি সিরাম বা এজিং ক্রিম ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং বয়সের দাগ ও বলিরেখা কমায়।
সবশেষে, শীতকালে গরম পানিতে গোসল না করে, মৃদু গরম পানিতে গোসল করা উচিত, কারণ গরম পানি ত্বক শুষ্ক করে দেয়। ত্বকের শুষ্কতা এড়াতে এবং উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে এই সমস্ত উপকরণ ব্যবহার করতে পারেন।
শীতকালে ছেলেদের মুখের ক্রিম
শীতকালে ছেলেদের মুখের ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যেতে পারে, তাই ত্বকের সঠিক যত্ন নিতে উপযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, শীতের সময় ত্বককে গভীরভাবে হাইড্রেট করতে সেরামাইড এবং জোজোবা অয়েল সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত, যা ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
এছাড়া, হাইলোরনিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ ক্রিম ত্বকের শুষ্কতা দূর করে এবং ত্বককে মসৃণ ও সতেজ রাখে। রাতে ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য নাইট ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে, যা ত্বকের আর্দ্রতা বাড়িয়ে এবং ত্বককে স্বাস্থ্যকর রাখে।
শীতকালে, ত্বক UV রশ্মি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি, কারণ শীতের দিনে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। ফেস অয়েল যেমন আর্গান অয়েল বা জোজোবা অয়েল ত্বককে আর্দ্র, নরম এবং সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
এই ধরনের ক্রিম ও অয়েল ব্যবহার করলে ছেলেরা শীতকালে ত্বকের সঠিক যত্ন নিতে সক্ষম হবে এবং ত্বক থাকবে মসৃণ, উজ্জ্বল ও সুস্থ।
শীতে মেয়েদের জন্য কোন ক্রিম সবচেয়ে ভালো
শীতকালে মেয়েদের ত্বক সাধারণত শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যেতে পারে, তাই এমন ক্রিম ব্যবহার করা প্রয়োজন যা ত্বককে গভীরভাবে হাইড্রেট করে এবং শুষ্কতা দূর করে। প্রথমত, শিয়া বাটার ক্রিম খুবই উপকারী, কারণ এটি ত্বককে গভীরভাবে আর্দ্রতা প্রদান করে এবং শুষ্ক ত্বক থেকে রক্ষা করে।
শিয়া বাটার ত্বককে নরম ও মসৃণ রাখে এবং ত্বকের আর্দ্রতা বজায় রাখে। তাছাড়া, সেরামাইড ক্রিম ত্বকের বাইরের প্রাকৃতিক বাধা শক্তিশালী করে এবং ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে, যা শুষ্ক ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
হাইলোরনিক অ্যাসিড ক্রিম ত্বককে গভীরভাবে হাইড্রেট করে এবং আর্দ্রতা বাড়ায়, ফলে ত্বক সতেজ এবং মসৃণ থাকে। শীতকালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখার জন্য ভিটামিন সি ক্রিম ব্যবহার করা যেতে পারে, যা ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
আর্গান অয়েল ক্রিম ত্বকের শুষ্কতা ও রুক্ষতা দূর করে এবং ত্বককে নরম, মসৃণ ও উজ্জ্বল রাখে। এই সব ধরনের ক্রিম শীতকালে ত্বকের সঠিক যত্ন নিতে সহায়ক এবং ত্বক সুস্থ, মসৃণ এবং উজ্জ্বল রাখে।
জনপ্রিয় ব্লগ ১ : গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ, কিভাবে বুঝবেন ?
জনপ্রিয় ব্লগ ২ : গর্ভবতী মহিলার গর্ভাবস্থায় বমি হলে কার্যকরী কিছু করণীয় কাজ
জনপ্রিয় ব্লগ ৩ : সিজারের পর মায়ের যত্ন কিভাবে নিবেন
উপসংহার:
শীতকালে ত্বকের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ শীতের ঠান্ডা এবং শুষ্ক আবহাওয়া ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা ও কোমলতা হারিয়ে ফেলে। তবে, কিছু সহজ ও কার্যকরী যত্নের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।
নিয়মিত ময়েশ্চারাইজিং, উপযুক্ত সানস্ক্রিন ব্যবহার, এবং পর্যাপ্ত পানি পান করা ত্বককে শুষ্কতা ও রুক্ষতা থেকে রক্ষা করে। এছাড়া, ঘরোয়া উপায় যেমন মধু, দই, নারকেল তেল, ও গ্লিসারিন ত্বকের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
শীতকালে ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ সিরাম, হাইলোরনিক অ্যাসিড, এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যবহার করা অত্যন্ত কার্যকরী। ছেলেদের এবং মেয়েদের জন্য বিশেষভাবে উপযুক্ত ক্রিম ও তেল ব্যবহার করলে ত্বক মসৃণ, আর্দ্র ও সুস্থ থাকবে।
শীতকালে ত্বকের সঠিক যত্ন নেওয়া হলে, ত্বক থাকে স্বাস্থ্যকর, উজ্জ্বল এবং কোমল, যা শীতের রুক্ষ আবহাওয়াতেও আপনার সৌন্দর্য রক্ষা করবে।
প্রায় জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী
১. শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়ার কারণ কী?
শীতকালে শীতল আবহাওয়া, কম আর্দ্রতা এবং ঠান্ডা বাতাস ত্বকের প্রাকৃতিক তেল শুষে নেয়, যার ফলে ত্বক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। সঠিক যত্ন নিলে এই সমস্যা কমানো সম্ভব।
২. শীতকালে ত্বক আর্দ্র রাখতে কি করা উচিত?
শীতকালে ত্বক আর্দ্র রাখতে প্রতিদিন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। গোসলের পর, দিনে ২-৩ বার ত্বকে ময়েশ্চারাইজার লাগান এবং ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন যা আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী উপযুক্ত।
৩. শীতে ঠোঁট ফাটা থেকে বাঁচানোর জন্য কী করা উচিত?
ঠোঁটের শুষ্কতা এবং ফাটার সমস্যা এড়াতে শিয়া বাটার, ভিটামিন ই যুক্ত লিপ বাম বা নারকেল তেল ব্যবহার করুন। রাতে ঠোঁটে লিপ মাস্ক বা তেল লাগানো ভালো।
৪. শীতকালে ময়েশ্চারাইজার কিভাবে ব্যবহার করা উচিত?
গোসলের পর অথবা মুখ ধোয়ার পর ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। এসময় ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখুন। হাইলোরনিক অ্যাসিড, সেরামাইড এবং জোজোবা অয়েল সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উপকারী।
৫. শীতে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ানোর জন্য কী করতে হবে?
শীতকালে ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে উজ্জ্বলতা কমে যেতে পারে। সঠিক ময়েশ্চারাইজিং, ভিটামিন সি সিরাম ব্যবহার এবং ত্বকের মৃত কোষ দূর করতে স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন। পাশাপাশি, পর্যাপ্ত পানি পান এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা প্রয়োজন।
৬. শীতে হাত-পা শুষ্ক হয়ে গেলে কী করতে হবে?
শীতে হাত-পা শুষ্ক হয়ে ফাটতে পারে। হাত-পায়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন এবং গ্লাভস বা মোজা পরুন। এছাড়া, রাতে তেল বা ক্রিম লাগিয়ে ঘুমান।
৭. শীতকালে মুখে কোন পণ্য ব্যবহার করা উচিত?
শীতে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সেরামাইড, জোজোবা অয়েল, হাইলোরনিক অ্যাসিড এবং ল্যাকটিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। এই উপাদানগুলো ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং শুষ্কতা দূর করে।
৮. শীতে ত্বক যত্নে কি ঘরোয়া উপায় আছে?
হ্যাঁ, শীতকালে ত্বকের যত্ন নিতে কিছু ঘরোয়া উপায় রয়েছে যেমন, মধু, দই, নারকেল তেল, গ্লিসারিন ও গোলাপজল মিশিয়ে ত্বকে ব্যবহার করা। এই উপাদানগুলো ত্বককে আর্দ্র রাখে এবং উজ্জ্বলতা বাড়ায়।
৯. শীতে কি সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি?
হ্যাঁ, শীতে সূর্যের UV রশ্মি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। বাইরে যাওয়ার আগে সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন, বিশেষত SPF ৩০ বা তার বেশি সানস্ক্রিন।
১০. শীতকালে ত্বকের সঠিক যত্নে কী কী পণ্য ব্যবহার করা উচিত?
শীতকালে সঠিক ত্বকের যত্ন নিতে সেরামাইড, জোজোবা অয়েল, হাইলোরনিক অ্যাসিড, সানস্ক্রিন, এবং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত। এ ছাড়া, ভিটামিন সি সিরাম এবং নাইট ক্রিম ব্যবহার করা ত্বকের জন্য উপকারী।
10 thoughts on “শীতকালে ত্বকের যত্ন নিতে প্রয়োজনীয় কিছু টিপস”